চট্টগ্রাম মহানগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম বাকলিয়ায় ডিসিরোড থেকে শুরু করে দেওয়ান বাজার, শান্তি নগরের বগার বিল  প্রত্যেক জায়গায় অপরাধ জগতের নতুন সম্রাট হিসেবে নিজেকে আবির্ভাব হিসেবে গড়ে তুলেছেন দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনের নামধারী সাংবাদিক এ কে এম তরিকুল ইসলাম রানা ওরফে কাইল্লা রানা।

মূলত তার পিতা সাবেক কাউন্সিলর মাষ্টার জাফরুল ইসলাম

আরেকদিকে তার ভাই সাবেক উপনির্বাচনে জয়ী কাউন্সিলর বিএনপি পন্থী এ কে এম আরিফুল ইসলাম ডিউক এর নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেকে অপরাধ জগতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সবকিছু যেন তার নিজের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর।

রানা মূলত চোর সিন্ডিকেটের সর্দার হিসেবে নিজেকে তৈরি করেন অনেক আগেই। এখন অত্র এলাকায় চুরি, ডাকাতি, মদ, জুয়া, ইয়াবা ব্যবসা, চাঁদাবাজি, জায়গা দখল থেকে শুরু করে এমন কোনো অপরাধ নেই তিনি করেন না।

কেউ নতুন কোনো ভবন নির্মাণ করতে গেলে চাঁদা ছাড়া তার কাজ বন্ধ থাকে চলতে থাকে নির্যাতনের শিকার। নিজেকে ২০১৯ সালে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের  সি-ইউনিট এর স্বঘোষিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আবির্ভাব ঘটান তার সভাপতি হিসেবে আছেন মুহাম্মদ ফারুক, এরপর থেকে রানা একে একে সব অপকর্মের স্বাক্ষর রেখেছেন বীরদর্পে।

পূর্বের তার অপকর্ম পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চট্টগ্রামে চোর চক্রের গডফাদার ছিলেন যুবলীগ নামধারী রানা, ২০১৯ সালের ৪ঠা অক্টোবর আদালতে জবানবন্দিতে সেলু নামের এক চোর রানার নাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তার তথ্য অনুযায়ী রানার ছত্রছায়ায় বছরের পর বছর ধরে চট্টগ্রাম শহরের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় চুরি করে যাচ্ছিল ওরা। চোরাই মালামাল বেশি দামে বিক্রি করার জন্য তাদের রয়েছে একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানও। এই চোর চক্র বিচারক, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে টার্গেট করা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের বাসায় হানা দেয়। ভবনের পাইপ বেয়ে ১০ তলা পর্যন্ত চোখের পলকে উঠে যেতে পারে চক্রের এক সদস্য। প্রতিদিন সেই সময়ের যুবলীগ নেতা রানাকে এক হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে হতো চক্রটির।

কোরবানির ঈদে নগরীর কাজীর দেউড়ির সানমার এলিভেরা ভবনের চতুর্থ তলায় বসবাসরত এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাট থেকে ২০ ভরি স্বর্ণ ও দুই লাখ টাকা চুরির মামলার তদন্তে বের হয়ে আসে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। চুরির আট মামলার আসামি মো. সোহেল ওরফে সেলুর আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে এসব তথ্য-উপাত্ত।

আট মামলার আসামি দুর্ধর্ষ চোর মো. সোহেল ওরফে সেলু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আমি নগরীর বাকলিয়ায় পুরাতন স্ট্ক্র্যাপের ব্যবসা করি। তিন বছর ধরে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। নগরীর বাকলিয়ার কমিশনার (কাউন্সিলর) জাফরের ছেলে  রানার সঙ্গে অনেক আমার আগে পরিচয় হয়। তিনি আমাদের ‘বড় ভাই’। রানা এলাকার নেতা হওয়ায় তার কথা শুনতে হতো আমাদের। তার কথা না শুনলে এলাকায় ব্যবসা করতে পারতাম না। তাই চুরির মাল বেশি দাম পাওয়ার জন্য আমার কাছে সব সময় বিক্রি করে আসছিল তারা। আনোয়ার ওরফে মালিঙ্গা, শাকিল ওরফে রেন্ডি, হৃদয়, মাসুম ও নয়ন কিছু চুরির মাল আমার কাছে এনে বিক্রি করে। এ ব্যবসার জন্য রানা প্রতিদিন আমার কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে চাঁদা নিত। রানা আমাদের সবার বড় ভাই। তার কথামতো আমরা কাজ করি।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন চোর সেলু। তিনি কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ধন্যারপাড়ের মৃত মোহন মাঝির ছেলে। থাকেন চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানার শান্তিনগর বগারবিলে ইসলাম ভিলায়।

চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা এল‍াকায় চাঞ্চল্যকর  প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইয়াছির আরাফাত ইমন খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়ায় মামলা সহ একাধিক মামলার আসামি একেএম তরিকুল ইসলাম রানা ওরফে কাইল্লা রানা।

সম্প্রতি বাকলিয়ার বগারবিল শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিং-২ রাতে আঁধারে ৫ শতাংশের একটি প্লট দখল করতে যান তরিকুল ইসলাম রানা সহ তার সহযোগিরা।

 

গোপন সুত্রে  জানা  যায় ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাতে বাকলিয়া বগারবিল শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিং-২ এ রানার নেতৃত্বে তার সাঙ্গ-পাঙ্গা নিয়ে জায়গা দখল করতে যায়, দখলের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দখলবাজরা সেখান থেকে সরে পড়েন।  তরিকুল ইসলাম রানা ও তার সহযোগিদের পুলিশ আসার আগে চলে আসতে দেখা যায়।

অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে ভূক্তভোগী জাসেদ দৈনিক কলম কথা কে বলেন- ‘আমার বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় হলেও আমি শহরে বসাবাস করি। একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে জব করছি। বগারবিল শান্তিনগর নিরাপদ হাউজিং-২ এলাকায় ২০১৯ সালে আড়াই গন্ডার বেশি একটি প্লট বায়না করি। সেখানে প্লটে অর্ধেক করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে বিভিন্ন লোকজন দিয়ে চাঁদা দাবি করে আসছে রানার লালিত-পালিত গুন্ডা বাহিনী।

তারা নিয়মিত দাবি করে আসছেন টাকা না দিলে প্লটটির স্থানে কোনো ধরনের কাজ করা যাবে না।তিনি এ বিষয়ে বাকলিয়ায় থানায় একটি অভিযোগ দেন। তাদেরকে চাঁদার টাকা দিতে বারবার অস্বীকৃতি জানালে ক্ষোভে গত ৩১ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে আমার প্লটটি দখল করতে যায় রানা ও তার সহযোগিতারা। পরে পুলিশকে খবর দেওয়ার পর তাৎক্ষণিক তারা ঘটনাস্থলে গেলে দখলবাজরা সরে পড়েন।

গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায় বগারবিল এলাকার সাধারণ জনগন ক্ষোভে ফেঁপে উঠে তার বিরুদ্ধে। বিক্ষোভ মিছিল করে কিশোরগঞ্জের এলাকার অস্থায়ী বসবাসকারী লোকজন। তারা অভিযোগ করেন কাইল্লা রানা লালিত গুন্ডা বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ। তারা দৈনিক কাজ শেষ করে ফেরার সময় টাকা পয়সা, মোবাইল ছিনতাই সহ সব অপকর্মে করে থাকে, তারা স্থানীয় প্রশাসন সহ সরকারের কাছে প্রতিকার দাবী করেন দৈনিক নতুন দিন, এইচ টি বাংলা, চ্যানেল ৮১ সহ শীর্ষ খবরের প্রতিনিধির মাধ্যমে।

এলাকার ভাসমান তরকারি ব্যবসায়ী, কাঁচামাল ব্যবসায়ী, বাদাম ব্যবসায়ী, ফুচকা ব্যবসায়ী, পিঠা ব্যবসায়ী,দিনমজুর, রাজমিস্ত্রী সহ সকলের অভিযোগের তীর তরিকুল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে।

এই ব্যাপারে বাকলিয়া থানার এস আই নিদর্শন  বড়ুয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান ঘটনার দিন যখন ফোন আসে তখন আমি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বগারবিল শান্তিনগর হাউজিং সোসাইটিতে যান। সেখানে দেখতে পান একে এম তরিকুল ইসলাম রানা পালাতে গিয়ে পা ভেঙে যায় কিন্তু স্থানীরা কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেয়নি। এখন স্থানীয়রা প্রশাসনকে যদি কোনো অভিযোগ না করে বা কেউ কিছু না বলে আমাদের আইনগত কিছু করার থাকে না।